
চীনের আলিবাবা বাংলাদেশে ই-কমার্স ব্যবসায় যুক্ত হতে যাচ্ছে। চীনে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস চিঠি দিয়ে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছে।
চীনে বাংলাদেশ দূতাবাসের এমডি জসিমউদ্দিন গত ১৬ জানুয়ারি সিনিয়র বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষকে এক চিঠি দিয়ে আলিবাবা বাংলাদেশের ই-কমার্সে যুক্ত হওয়ার বিষয়টি জানান। তপন কান্তি ঘোষ এ বিষয়ে দেশের ই-কমার্স ব্যবসায় জড়িত ব্যক্তিদের নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক ডাকতে বলেছেন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় ডিজিটাল কমার্স সেলের প্রধান এবং অতিরিক্ত সচিব বলেন, ইতোমধ্যে আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কয়েকটি বৈঠক করেছি। দেশের ই-কমার্স ব্যবসায় আলিবাবা এলে এ দেশের ব্যবসায়ীর প্রক্রিয়া ও ভোক্তাদের সেবা পাওয়ার বিষয়টি আরও ভালো হবে।
বেইজিংয়ে বাংলাদেশের দূতাবাসের চিঠিতে বলা হয়েছে, বেইজিংয়ে আলিবাবা ই-কমার্স কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ ঘটিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে ইতালিয়ান ট্রেড এজেন্সি অবদান রেখেছে। এতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের মাত্র ১৬৬টি কোম্পানি দুই দশক ধরে আলিবার সঙ্গে ব্যবসা করছে। এখন এ কোম্পানির সংখ্যা অনেক বাড়বে।
আলিবাবার প্রস্তাবে রয়েছে, দেশের ই-কমার্স কোম্পানিগুলো তাদের সরবরাহকারী সদস্য হতে পারবে। তবে এর জন্য তাদের ফি প্রদান করতে হবে। চীনের আন্তর্জাতিক মানের পণ্যের জন্য তারা বাংলাদেশে জাতীয় প্যাভিলিয়ন তৈরি করে দেবে। ফলে দেশের ই-কমার্স কোম্পানিগুলো আলিবাবার দুই কোটি ভোক্তার নাগাল পাবে। তাদের ব্যবসা দেশের বাইরে আরও সম্প্রসারিত হবে।
আলিবাবার প্রস্তাবিত সুপারিশে বলা হয়েছে, কোম্পানিটি দেশের ই-কমার্স কোম্পানিগুলোকে অনলাইন মার্কেটের জন্য বাজেট সহায়তা হিসেবে প্রণোদনা ভর্তুকি দেবে। এর পরিমাণ কোম্পানিগুলোর মোট বাজেটের ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ ।
২০১৮ সালে সুপরিচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘দারাজ’-এর ১০০ ভাগ শেয়ারই কিনেছে আলিবাবা। দারাজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ২০১২ সালে পাকিস্তানে। এটি মূলত অনলাইন মার্কেটপ্লেস হিসেবে কাজ করে, যেখানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য বা সেবা বিক্রি করতে পারে। দারাজ পরে বাংলাদেশ, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা ও নেপালেও তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণ করে।
দারাজের পেরেন্ট কোম্পানি ছিল জার্মানির রকেট ইন্টারনেট। জার্মান এ কোম্পানিটি দক্ষিণ এশিয়ায় তাদের ব্যবসা আলিবাবার কাছে বিক্রি করে দিয়েছিল।
ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) হিসাবে বাংলাদেশে আনুমানিক আড়াই হাজার ই-কমার্স সাইট রয়েছে। ফেসবুকভিত্তিক বিভিন্ন ব্যবসায়িক উদ্যোগ রয়েছে দেড় লাখের বেশি। এসব প্লাটফর্মে প্রতিদিন লক্ষাধিক পণ্যের অর্ডার ও ডেলিভারি হচ্ছে। সে হিসেবে ই-কমার্স খাতের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি বর্তমানে প্রায় ৭৫ শতাংশ। খাতটির আকার ৮ হাজার কোটি টাকা। ২০২৩ সাল নাগাদ এ খাতের আকার ২৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কেডি