
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
শোকের মাস আগস্ট। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোর রাতে রাজধানী ঢাকার ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় বাঙালির প্রথম স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের। তাঁর দু'কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা সে সময় দেশের বাইরে থাকায় ঘাতকদের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন।সভ্যতার ইতিহাসে এটি একটি জঘন্য, নির্মম ও কাপুরুষোচিত হত্যাকাণ্ড বলে বিবেচিত। মহান এই নেতার সঙ্গে চট্টগ্রামের সম্পর্ক ছিল নিবিড়। লেখক ও গবেষক মুহাম্মদ শামসুল হকের গবেষণায় এ বিষয়ে বিস্তৃত জানার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। মহানগর নিউজের পাঠকদের জন্য ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে 'স্মৃতিরেখায় চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু' শীর্ষক গবেষণামূলক প্রবন্ধটি প্রকাশিত হবে।
মুহাম্মদ শামসুল হক «
প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালের নির্বাচনের আগে ১৫ ফেব্র“য়ারি চট্টগ্রাম এসেছিলেন। ওইদিন তিনি চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস মাঠে পুলিশের একটি দল তাঁকে গার্ড অব অনার প্রদান করে। সার্কিট হাউসে তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে তিনি বৈঠকে মিলিত হন। এছাড়া, ঐতিহাসিক পলোগ্রাউন্ড ময়দানে সংবর্ধনা দেওয়া হয় বঙ্গবন্ধুকে। এতে বক্তৃতাকালে বঙ্গবন্ধু বলেন, ২৫ মার্চের সেই রাতে শত্র“র হাতে বন্দী হওয়ার পূর্ব মুহূর্তে তিনি স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন এবং জনগণকে শত্র“র মোকাবেলা করে স্বাধীনতা অর্জনের আহবান জানিয়েছিলেন।
১৬ ফেব্র“য়ারি দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গণসংযোগ সফরের দ্বিতীয় পর্যায়ে ১৫ ফেব্র“য়ারি কক্সবাজার পটিয়া ও নগরীর পলোগ্রাউন্ড ময়দানে পৃথক তিনটি বিশাল জনসভায় ভাষণ দেন। এসব সমাবেশে তিনি আঞ্চলিকতা ও ধর্ম নিয়ে রাজনীতির বিরুদ্ধে তাঁর দৃঢ় অবস্থানের কথা তুলে ধরেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন বীর চট্টলার সাহসী জনতা আঞ্চলিকতা পরিহারের ক্ষেত্রে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে।
আবুল ফজলের দৃষ্টিতে বিনয়ী বঙ্গবন্ধু: বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বিশিষ্ট সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক আবুল ফজলের পরিচয় ও যোগাযোগ স্বাধীনতার আগে চিঠি চালাচালির মাধ্যমেÑ মূলত তাঁর লেখালেখির সূত্র ধরে। তাঁর স্মৃতিকথায় উলেখিত তথ্যমতে, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তাঁর সরাসরি প্রথম সাক্ষাৎ হয় স্বাধীনতার পর, ১৯৭২ সালের ২০ মার্চ বিকেলে ঢাকায় প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হাউসে।
এরপর একই বছর ডিসেম্বরের শেষে কিংবা ৭৩ এর প্রথম দিকে প্রথমে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে এবং পরে বিকেলে পলোগ্রাউন্ড ময়দানে জনসভামঞ্চে। এটি ছিল স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর প্রথম চট্টগ্রাম সফর। এ সফর উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য গঠিত কমিটির সভাপতি করা হয়েছিল অধ্যাপক আবুল ফজলকে। সেদিন সার্কিট হাউসের আশপাশের এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে গিয়েছিল বঙ্গবন্ধুর আগমণ-সংবাদ শুনে। অধ্যাপক আবুল ফজলের বর্ণনা মতে, বঙ্গবন্ধুকে বহনকারী হেলিকপ্টার নেমেছিল সার্কিট হাউসের সামনে খোলা জায়গায়। হেলিকপ্টার মাটি স্পর্শ করতে না করতেই ছাত্র-জনতাসহ দর্শনপ্রার্থীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায় প্রিয় নেতাকে মাল্যভূষিত করার জন্য। ভেঙে পড়ে পুলিশি কর্ডন। এ রকম ভিড়ের মাঝেই মন্ত্রী জহুর আহমদ চৌধুরী এবং অধ্যাপক আবুল ফজল কোনো রকমে প্রধানমন্ত্রীকে মাল্যভূষিত করেন। শিক্ষক ও বুদ্ধিজীবিদের একজন প্রধানমন্ত্রী কীভাবে সম্মান জানাতে পারেন তা আবুল ফজলের সাথে বঙ্গবন্ধুর সেদিনের আচার-ব্যবহারে ফুটে উঠেছিল। আবুল ফজল লিখেছেন: ‘এ হট্টগোলের মধ্যে আমিও কোনোরকমে মালা একটি পরিয়ে দিলাম তাঁর গলায়। তারপর তিনি আমার হাত ধরে উপরে উঠে এলেন-হাঁটতে হাঁটতে বিশৃঙ্খল জনতাকে কিছুটা ভর্ৎসনাও করলেন। আমাকে বললেন-আপনার দুর্দশা দেখেই আমি তাড়াতাড়ি নেমে পড়লাম। প্রোটোকলের অপেক্ষা করলাম না। উঠে এসে সার্কিট হাউসের দোতলায় বসে পড়ে তিনি যেমন আমরাও তেমনি হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম। জনাব এ কে খানও ওখানে প্রতিক্ষায় ছিলেন।’
সার্কিট হাউস থেকে বিদায় নিয়ে বিকেল তিনটায় পলোগ্রাউন্ডের জনসভায় গিয়েছিলেন আবুল ফজল। অভ্যর্থনা কমিটির সভাপতি হিসেবে তিনি অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এবং স্বাগত ভাষণ দেন। সেখানেও বক্তব্য দেওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিনয়ের প্রমাণ মিলে আবুল ফজলের কথায়। ‘অল্পক্ষণের মধ্যে জহুর আহমদ চৌধুরী আর কয়েকজন আওয়ামী লীগ কর্মকর্তাকে সাথে নিয়ে শেখ সাহেব এসে পড়লেন। জনতা জয়ধ্বনি ও নানা স্লোগানে আকাশ-বাতাস বিদীর্ণ করে তুলল। তিনি চারদিকে ঘুরে ঘুরে দুহাত তুলে জনতার অভিবাদন গ্রহণ করলেন আসন নেয়ার আগে। তিনি আসন নিতেই জাতীয় সংগীত শুরু হলো। উঠে দাঁড়ালাম সবাই। সংগীত শেষে অভিনন্দনপত্র পাঠ করলেন জেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক জনাব হান্নান। তারপর জহুর আহমদ চৌধুরী আর সভাপতি হিসেবে আমি স্বাগত সম্ভাষণ জানালাম প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমানকে। তিনি আমাকে বললেন- : বক্তৃতায় গত মুক্তিযুদ্ধে এবং অন্যভাবে যাঁরা শহীদ হয়েছেন তাঁদের জন্য দোয়া করবো, তাঁদের রুহের মাগফেরাত কামনা করবো, আপনি কিছু মনে করবেন না তো? বললাম-আমি কেন কিছু মনে করতে যাবো? দোয়া করবেনই তো ? ..........উঠে দাঁড়িয়েই সর্বাগ্রে সব শহীদের জন্য খোদার রাহে মাগফেরাত কামনা ও মুনাজাত করে তবে বক্তৃতা শুরু করলেন।”
আহমুদর রহমান আজমীর স্মৃতি : মিরসরাইয়ের বাসিন্দা মাওলানা আহমদুর রহমান আজমী ছাত্রাবস্থা থেকে প্রগতিশীল সমাজতান্ত্রিক ধ্যান-ধারণায় বিশ্বাসী ছিলেন। মাঝখানে (১৯৫৪-৫৭) জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ৫৭ সালে কাগমারী সম্মেলনের পর ভাসানী ন্যাপে যোগ দেন। স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তাঁর দেখা হয় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে।
তিনি বলেন, ‘১৯৭৩ সালে সম্ভবত নির্বাচনের আগে বঙ্গবন্ধু একবার চট্টগ্রাম এসেছিলেন। তিনি সার্কিট হাউসে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে উপস্থিত ছিলাম আমিও। বঙ্গবন্ধু আমাকে দেখে কুশল বিনিময়ের পর বললেন, ‘৫৭ সালের পর তুমি একবারও আমার সঙ্গে দেখা করলে না। এখন থেকে যখনই প্রয়োজন হবে আমার সঙ্গে দেখা করবে।’ ৭৫ সালে বাকশাল গঠন করা হলে তিনি আমাকে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা কমিটির সম্পাদক করেছিলেন।
জাতীয় ঐক্য গড়ার তাগিদ : ১৯৭৩ সালে সার্কিট হাউসে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে পেশাজীবীদের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তখনকার সদ্যবিদায়ী জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা মাহবুবুল হক (পরবর্তী সময়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, ভাষা বিজ্ঞানী ড. মাহবুবুল হক)। তিনি বলেন, ‘এটা সম্ভবত বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকের অংশ ছিল। সার্কিট হাউসের বাইরে দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রচুর ভিড় ও স্লোগান চলছিল। বঙ্গবন্ধু কোনোরকমে দোতলায় উঠে দরজা বন্ধ করে দেন যাতে বাইরে থেকে কেউ ঢুকতে না পারে। দেশের তৎকালীন পরিস্থিতিতে তখন আওয়ামী লীগের সাথে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টির সমন্বয়ে ত্রিদলীয় ঐক্যজোট গঠনের প্রক্রিয়া চলছিল। সার্কিট হাউসের ওই বৈঠকে যতদূর মনে পড়ে ন্যাপ-কম্যুনিস্ট পার্টির পক্ষ থেকে মাওলানা আহমদুর রহমান আজমী, অ্যাডভোকেট সফিউল আলম, অ্যাডভোকেট নূরুন্নবী, বখতেয়ার নূর সিদ্দিকী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বঙ্গবন্ধু সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন এবং বাংলাদেশে সমাজতান্ত্রিক অভিযাত্রা শুরু করার কথা উলেখ করেন।’
ছবি তুলে গর্বিত প্রসাদ দাস দেবু : সার্কিট হাউজ এবং পলোগ্রাউন্ড ময়দানে ছবি তুলেছিলেন মুক্তিযোদ্ধা ও বর্তমান চিত্র সাংবাদিক দেবপ্রসাদ দাস দেবু। তিনি জানাচ্ছেন, ‘বঙ্গবন্ধু হেলিকপ্টারযোগে সার্কিট হাউজ মাঠে অবতরণ করার পর তাঁর ব্যক্তিগত ফটোগ্রাফার মোহাম্মদ আলম ও চট্টগ্রামের ওসমান গণি মনসুরের ছবি তোলা নিয়ে ঠেলাঠেলি হয়। এরই মধ্যে বঙ্গবন্ধুকে পুলিশের গার্ড অব অনার প্রদানের ছবি তুলে ফেলি আমি। বঙ্গবন্ধু সার্কিট হাউজের দোতলায় রাজনীতিক ও সুধি সমাজের সঙ্গে বৈঠকের পর বিকেল ৩টার পর পলোগ্রাউন্ড ময়দানে চলে যান। আমিও পলোগ্রাউন্ড ময়দানে হাজির হই। ময়দান পূর্ণ হয়ে দক্ষিণে পাহাড়ের পাদদেশ পর্যন্ত লোকে লোকারণ্য হয়ে গিয়েছিল। বঙ্গবন্ধু মঞ্চে উঠেই এমপি-নেতাদের ভিড় দেখে বিরক্ত প্রকাশ করে সবাইকে মঞ্চ থেকে নামিয়ে দেন। সেখানে শুধু সভাপতি অধ্যাপক আবুল ফজল, মন্ত্রী জহুর আহমদ চৌধুরী এবং সম্ভবত এম এ হান্নান উপস্থিত ছিলেন। সেই জনসভা মঞ্চে ভাষণ দানরত বঙ্গবন্ধুর ছবি তুলতে পেরে খুবই গর্ববোধ করেছিলাম। সেই ছবি স্মৃতিস্বরূপ এখনো যতœ করে রেখে দিয়েছি।’
চট্টগ্রাম বন্দরে অব্যবস্থাপনা দেখে অসন্তোষ: চট্টগ্রাম বন্দরের অবসরপ্রাপ্ত নিরাপত্তা কর্মকর্তা চৌধুরী মাহবুবুর রহমান জানাচ্ছেন, ১৯৭৩ সালের ৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম বন্দরে আকস্মিক সফরে আসেন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি কয়েকটি জেটি এলাকা পরিদর্শন করেন এবং নিরাপত্তাসহ বেশ কিছু ক্ষেত্রে অব্যবস্থাপনা দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। পরে বন্দর কর্তৃপক্ষের কার্যালয়ে ঊর্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় তিনি বন্দরের নিরাপত্তা স্থল ও নৌবাহিনীর হাতে ন্যস্ত করার কথা ঘোষণা করেন।
জহুর আহমদ চৌধুরীর জানাজায় : ১৯৭৪ সালের ১ জুলাই ভোরে অসুস্থতাজনিত ঢাকার মিন্টো রোডের বাসভবনে মন্ত্রী জহুর আহমদ চৌধুরী মৃত্যুবরণ করলে বঙ্গবন্ধু সেখানে ছুটে যান এবং শেষ বিদায় ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের সব ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়ে নিজে হেলিকপ্টারে করে চট্টগ্রাম ছুটে আসেন। তিনি প্যারেড ময়দানে অনুষ্ঠিত জহুর আহমদ চৌধুরীর বিশাল জানাজায় অংশ নেন এবং সেখান থেকে প্রয়াত নেতাকে দামপাড়াস্থ পারিবারিক কবরস্থানে দাফনের সময় উপস্থিত হয়ে মোনাজাত অংশ নেন। এরপর তিনি প্রয়াত নেতার বাসায় গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সান্তনা দেন। বঙ্গবন্ধু তাঁর শাহাদাৎ বরণের আগে পর্যন্ত চৌধুরীর পরিবারের দেখাশোনা করে গেছেন।
৭৪ সালে চট্টগ্রাম নৌ ঘাঁটিতে : ১৯৭৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীর ঘাঁটিগুলোর নতুন নামকরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই নামকরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় ওই বছর ১০ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম নৌ-ঘাঁটিতে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি চট্টগ্রাম নৌ-ঘাঁটিকে ‘বা-নৌ-জা ঈশা খাঁ’ নামকরণ করেন। ‘অকল্পনীয় বর্ণাঢ্য ও সুন্দর হয়েছিল সেদিনের কুচকাওয়াজ। ডায়াসের পাশে বাংলাদেশের সামরিক-বেসামরিক প্রায় সকল গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন।
১১ ডিসেম্বর দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ বিমান ‘বলাকা’যোগে বঙ্গবন্ধু চট্টগ্রাম পৌঁছুলে বিমানবন্দরে নৌবাহিনী প্রধান এম এইচ খান, সেনাবাহিনী প্রধান মেজর জেনারেল সফিউল্লাহ তাঁকে অভ্যর্থনা জানান। বঙ্গবন্ধু নৌবাহিনীর জওয়ানদের প্রতি শৃঙ্খলাবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘নিপরাধীদের ওপর আঘাত করিও না। কারণ অত্যাচারী কোনোদিন টিকে থাকতে পারে না।’
মুহাম্মদ শামসুল হক, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষণাকর্মী, সম্পাদক-ইতিহাসের খসড়া।