
রেলমন্ত্রীর সাথে ফোনে কথা বলছেন সুজন, কেবিনের করিডোরে অবৈধ যাত্রী এবং ময়লা ও বিবর্ণ সিট।
ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী (আন্তঃনগর) মহানগর প্রভাতী ট্রেনের অব্যবস্থাপনায় ক্ষোভ ঝেড়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন।
মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম রেল ভ্রমণকালে মহানগর প্রভাতীর ৭০৪নং ট্রেনে নানারকম অব্যবস্থাপনা দেখে রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনকে ফোন করে ক্ষোভ ঝাড়েন তিনি।
এ সময় খোরশেদ আলম সুজন বলেন, রেলপথ যাত্রী এবং পর্যটকদের কাছে সবসময়ই আকর্ষণীয়। প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে এক শহর থেকে আরেক শহরে ছুটে চলাকে অনেকেই উপভোগ করেন। আর সেই যাত্রাকে রোমাঞ্চকর করতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রেল ভ্রমণে বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়। সারাবিশ্বের যাত্রী এবং পর্যটকদের কাছে রেলপথ ভ্রমণ একটি আনন্দদায়ক ভ্রমণ হলেও বাংলাদেশে রেলপথ ভ্রমণটি ক্রমেই বিষাদে পরিণত হতে চলেছে।
সরেজমিনে পরিদর্শন করে তিনি আরও বলেন, সিটগুলো খুবই ময়লা এবং বিবর্ণ, কোচের ভেতর দুর্গন্ধ, নোংরা আবর্জনা, টয়লেটে আলো নেই, খাবারের কোচসহ কেবিনের করিডোরে দাড়িয়ে রয়েছে অবৈধ যাত্রী। এমনভাবে কোচগুলো অবৈধ যাত্রীতে ভরপুর হয়ে আছে যে, মহিলাদের টয়লেটে যাওয়ার পথও রুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। যাত্রীসেবার নিদারুন অব্যস্থাপনা নিয়ে চলছে রেলগুলো। অনেকটা অসহায় হয়ে যাত্রীরা রেল ভ্রমণ করছে বলে সাধারণ যাত্রীদের অভিযোগ। এতে করে সরকারের ভাবমূর্তিও নষ্ট হচ্ছে। অথচ একটু সদিচ্ছা এবং নজরদারি থাকলে এ খাতটি সরকারের আয়ের অন্যতম খাতে পরিণত হতে পারতো। আয় করতে পারতো বিপুল অংকের দেশীয় মুদ্রা।
তিনি আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার রেল খাতে হাজার হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের পরও সংকট কাটছে না। রেলের উন্নয়নে নানামূখী স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করলেও অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি আর অদক্ষতার কারণে রেলের লোকসান ক্রমেই বেড়েই চলছে। তার উপর রয়েছে টিকেট কালোবাজারির মাধ্যমে যাত্রী হয়রানি। একটি জাতীয় সম্পদকে যে কিভাবে দিনের পর দিন অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির মাধ্যমে ধ্বংস করা হচ্ছে তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ হচ্ছে রেল। চট্টগ্রামের আগামী দিনের বাণিজ্যিক গুরুত্বকে মাথায় রেখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যোগাযোগ খাতকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিলেও সে তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে একসময় লোকসানে থাকা রেলওয়েকে সুন্দর ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে যাত্রীবান্ধব এবং লাভজনক খাত হিসেবে রূপান্তরিত করা হয়েছে। আমাদের জাতীয় সম্পদ রেল যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের বিশ্বস্থ যোগাযোগ মাধ্যম হয়ে উঠবে বলে প্রত্যাশা সকলের। মহানগর প্রভাতী ট্রেনটি ৫টি স্টেশনে যাত্রাবিরতি করার কথা থাকলেও পথে পথে যাত্রাবিরতি শেষে একঘন্টা বিলম্বে স্টেশনে পৌঁছে বলে অভিযোগ করেন খোরশেদ আলম সুজন।
এআই