বৃহস্পতিবার ০৮ জুন ২০২৩

| ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০

KSRM
মহানগর নিউজ :: Mohanagar News

প্রকাশের সময়:
১৯:৫০, ২১ মার্চ ২০২৩

মহানগর ডেস্ক

চমেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রস্তাবিত জায়গা ‘দখলমুক্ত’

প্রকাশের সময়: ১৯:৫০, ২১ মার্চ ২০২৩

মহানগর ডেস্ক

চমেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রস্তাবিত জায়গা ‘দখলমুক্ত’

জেলা প্রশাসনের উচ্ছেদ অভিযান

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চীনের অর্থায়নে নির্মিত হতে যাওয়া বার্ন ইউনিটের জন্য প্রস্তাবিত স্থানে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।  
 
মঙ্গলবার (২১ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে নগরের চট্টেশ্বরী রোডের গোঁয়াছি বাগান এলাকায় এ অভিযান শুরু হয়। দুপুর পর্যন্ত চলা এ অভিযানে তিন শতাধিক অবৈধ বসতঘর উচ্ছেদ করে প্রায় পাঁচ একর জায়গা চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ রানা।

তিনি জানান, চীনের অর্থায়নে ১৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে পূর্ণাঙ্গ বার্ন ইউনিট নির্মাণের কাজ শুরু করতে যাচ্ছে চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ১৫০ শয্যার প্রস্তাবিত এই ইউনিটে ২০টি আইসিইউ, শিশুদের জন্য ৫টি আইসিইউ, ২৫টি এইচডিইউ ও ২টি অপারেশন থিয়েটার থাকবে।

চট্টেশ্বরী রোডের গোয়াছি বাগান এলাকায় চমেক হাসপাতালের স্থায়ী-অস্থায়ী চতুর্থ শ্রেণির কিছু কর্মচারীর বসতঘর ছিল, যারা দীর্ঘসময় ধরে বংশ পরম্পরায় হাসপাতালের বিভিন্ন কাজের সঙ্গে যুক্ত। চমেকের প্রধান ছাত্রাবাস সংলগ্ন হাসপাতালের জায়গায় তারা নিজেরাই ঘর বানিয়ে থাকতেন। বেআইনি হলেও হাসপাতালের বর্জ্য অপসারণসহ বিভিন্ন কাজে যুক্ত থাকায় তাদের এতদিন সরানো হয়নি।

বার্ন ইউনিট নির্মাণের জন্য সেই স্থানটি নির্ধারণের পর গত ১ মার্চ বাসিন্দাদের সেখান থেকে সরে যাবার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়।

চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান জানিয়েছেন, ২০ মার্চের মধ্যে তাদের সরে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। অন্যথায় ২১ মার্চ থেকে উচ্ছেদ অভিযানের বিষয় তাদের জানানো হয়েছিল।

এ অবস্থায় মঙ্গলবার সকাল থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে জেলা প্রশাসন। এসময় অনেককে আসবাবপত্র নিয়ে রাস্তায় দাঁড়াতে দেখা যায়। অনেকে দীর্ঘদিনের মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে কাঁদতে থাকেন। কেউ কেউ প্রতিবাদের চেষ্টা করেন।

উচ্ছেদ হওয়া বাসিন্দারা বলছেন, পোড়া রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য তাদের কপাল পুড়ে দিল চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী রাজু পাল বলেন, ২০ তারিখের মধ্যে আমাদের চলে যেতে বলেছিল। আমরা বললাম, মাসের মাঝখানে আমরা কোথায় যাব? ১ তারিখ থেকে আমরা চলে যাব। তারা সেটি মানেনি। আমার দাদু মারা গেছে এখানে, আমার বাবার জন্ম হয়েছে এখানে। আমরা দাদুর আমল থেকে হাসপাতালে কাজ করে আসছি। আমরা এখানে ফ্রি থাকি না, বিদ্যুৎ-গ্যাসের বিল সব দিই।

জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ রানা বলেন, ‘চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উচ্ছেদ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশে আমরা অভিযান পরিচালনা করেছি। কেউ কেউ অভিযোগ করছেন যে, তাদের নাকি সময় দেওয়া হয়নি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছেন, তাদের ২০ মার্চের মধ্যে অবৈধ বসতঘরগুলো ছেড়ে চলে যেতে নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। এরপর গতকাল (সোমবার) মৌখিকভাবে বাসিন্দাদের আজকের উচ্ছেদ অভিযানের বিষয় জানানো হয়েছিল।’

এরপরও কয়েকটি পরিবারের অনুরোধের প্রেক্ষিতে তাদের একদিন সময় দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা তিন শতাধিক অবৈধ ঘর উচ্ছেদ করে ৫ একর জায়গা দখলমুক্ত করেছি। এটির পুরোটাই হাসপাতালের জায়গা, আমরা তাদের বুঝিয়ে দিয়েছি। ২-৩টি পরিবার অনুরোধ করেছে যে, তারা একদিন পর নিজেরাই চলে যাবে। আমরা মানবিক বিবেচনায় তাদের অনুরোধ রেখেছি। যদি সরে না যায়, তাহলে কাল (বুধবার) আবার এসে উচ্ছেদ করব।’

এসএ