রোববার ০১ অক্টোবর ২০২৩

| ১৬ আশ্বিন ১৪৩০

KSRM
মহানগর নিউজ :: Mohanagar News

প্রকাশের সময়:
১৬:১১, ৪ মার্চ ২০২৩

মহানগর ডেস্ক

তাপস বড়ুয়ার ‘পাতা ঝরার উৎসবে’ বইয়ের প্রকাশনা উৎসব

প্রকাশের সময়: ১৬:১১, ৪ মার্চ ২০২৩

মহানগর ডেস্ক

তাপস বড়ুয়ার ‘পাতা ঝরার উৎসবে’ বইয়ের প্রকাশনা উৎসব

প্রকাশনা উৎসবে আজাদী সম্পাদক এমএ মালেক

আলোকচিত্র সাংবাদিক, বোস্টন প্রবাসী তাপস বড়ুয়ার জাপান সফর নিয়ে ভ্রমণ কাহিনি ‘পাতা ঝরার উৎসবে’র দ্বিতীয় সংস্করণের প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক মিলনায়তনে এ প্রকাশনা উৎসবের আয়োজন করা হয়।

দৈনিক আজাদীর সহযোগী সম্পাদক রাশেদ রউফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক।

আজাদী সম্পাদক বলেন, ‘প্রত্যেকের জীবনে ঝুঁকি থাকে। ঝুঁকি থাকে প্রতিটি কাজে। তারপরও সাহস করে এগিয়ে যেতে হয়। যেকোনো জায়গা থেকে প্রথম পদক্ষেপ নিতে হয়। তাহলেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানো যায়, আসে সাফল্য। তাপস বড়ুয়াও সাহস করে বাইরে যাওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে বলেই আজ সে এই অবস্থানে।’

তিনি আরও বলেন, ‘একজন সফল ব্যক্তির পেছনে সবসময় একজন নারী থাকেন। তাপস বড়ুয়ার ক্ষেত্রেও তার স্ত্রী তনুশ্রীর ভূমিকা রয়েছে। অনুপ্রেরণা রয়েছে। মানুষ বলে সংসার সুখের হয় রমণীর গুণে। আমি বলি– সংসার সুখের হয় দু’জনের গুণে। একজন আরেকজনকে মানিয়ে চলতে হয়, তবেই সংসার সুখের হয়। তারা দুজন একে অপরকে মানিয়ে চলতে পারছে বলেই আজ সফল বলা যায়। তাপস ২০ বছর আগে জাপান সফরে গিয়ে এই বই লিখেছিল। এখন ১৯ বছর ধরে আমেরিকায় থাকছে। আমেরিকাতে যা দেখছে, তা নিয়েও সে লিখবে বলে আমি আশা রাখি।’

কবি ও সাংবাদিক রাশেদ রউফ বলেন, তাপসের অনেক ভালো দিক আছে। তিনি কথা কম বলেন, কাজ করেন বেশি। সৃজনশীল একজন মানুষ। ১৯ বছর ধরে বাইরে থাকলেও মাঝে মাঝে কিন্তু আজাদীতে লেখেন। আলোকচিত্র সাংবাদিক হিসেবে তাপস বড়ুয়ার পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা ঈর্ষণীয় ছিল।

সিইউজে সভাপতি তপন চক্রবর্তী বলেন, ‘তখন একটি মোটরসাইকেলে করে পুরো চট্টগ্রাম শহর এবং শহরের বাইরেও দাপিয়ে বেড়াতেন তাপস বড়ুয়া। তিনি একজন তারকা সাংবাদিক। এখনো তার জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি। আজাদী ও তাপস বড়ুয়া যেন অবিচ্ছেদ্য অংশ।’

একুশে পত্রিকা সম্পাদক আজাদ তালুকদার বলেন, ‘আমরা সবাই জানি কুকুর আর বিড়ালের সাথে সখ্যতা হয় না। মেলবন্ধন হয় না। তাদের মাঝে সব সময় বৈরি সম্পর্ক। কিন্তু তাপস দা আবিষ্কার করে ফেললেন, কুকুর-বিড়াল একসাথে চলছে। তারা ঘুরাঘুরি-মাখামাখি করছে। সেই ছবি তুললেন তাপস দা। তারপর ছবিটা আজাদীতে জমা দিলেন। তাপস দা প্রতিদিন আজাদী কেনেন, পৃষ্ঠা উল্টান; দেখলেন যে, না ছবিটা আসছে না। ছবিটা সাতদিনের মাথায় ছাপানো হলো ‘স্নেহ বৈরিতা মানে না’ এই শিরোনামে। এটি লিড ছবিতে ছাপা হয়েছে। শুধু চট্টগ্রামে নয়, সারা বাংলাদেশে এটি প্রশংসিত হয়েছে। এটিই হচ্ছে তাপস বড়ুয়া।’

‘আমার অভিমত, তাপস বড়ুয়াকে এখনো আজাদীর সাংবাদিক বললে বেশি মানায়। আমি তাপসদাকে অনুরোধ করবো- সন্তানের জন্য একটা নিরাপদ রাষ্ট্র, উচ্চশিক্ষা দেওয়ার জন্য আপনি বোস্টনে থাকছেন। আপনার কাছে আমার বিনীত চাওয়া, জীবনের শেষ সময়টুকু হলেও রাশেদ রউফ ভাইয়ের সাথে আজাদীতে ফিরবেন। আজাদীর তাপস বড়ুয়া, এই পরিচয়ে যেন আপনার শেষ সমাধি হয়।’

‘পাতা ঝরার উৎসবে’ বই সম্পর্কে অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বোস্টন প্রবাসী তাপস বড়ুয়া বলেন, ‘আমি ছিলাম আলোকচিত্রী সাংবাদিক। কিন্তু আমার যে দুকলম লেখা– এর অনুপ্রেরণা দৈনিক আজাদী। আজাদীতে থাকাকালীন আমি জাপানে যাওয়ার সুযোগ পাই। সেখানে গিয়ে যা দেখি, আমার ভালো লাগে। বিস্ময় জাগে। আমি ছবি তুলি। পরে খণ্ড খণ্ড করে তা আজাদীতে লিখি। গাছের পাতা লাল হয়ে ঝরে। জাপানিরা তাকে ‘ওইসিকি’ বলে। বাংলায় পাতা ঝরার উৎসব।’

‘আমেরিকা গিয়ে প্রথম দিকে জীবনযুদ্ধে নামতে হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, যার কারণে ওই লেখালেখি থেকে বলতে গেলে কিছুটা বিচ্যুত হয়ে পড়ি। জাপান ভ্রমণ নিয়ে লেখা এই বই আমার সৃষ্টি। আনন্দের বিষয়। সৃজনশীল কাজ আমাকে খুব টানে। হঠাৎ সিদ্ধান্ত নিয়ে এই প্রকাশনা উৎসব। এটি আমেরিকা যাওয়ার পর আমাকে নিশ্চয় আনন্দ দেবে, তৃপ্তি দেবে।’

এসব কাজে সবসময় অনুপ্রেরণা দেওয়ায় স্ত্রী তনুশ্রী বড়ুয়াকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান দৈনিক আজাদীর এক সময়ের এ কৃতি আলোকচিত্র সাংবাদিক।

সহধর্মিণী তনুশ্রী বড়ুয়া বলেন, ‘মানুষের বেঁচে থাকার জন্য তার ভালো লাগার জিনিসগুলো ধরে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই তাপস বড়ুয়ার ভালো লাগার বিষয়গুলো ধরে রাখার চেষ্টা। এই শহর তাকে (তাপসকে) যেন একটা গতি দেয়। আমরা আমেরিকা গেলেও আমাদের শেকড় কিন্তু এখানেই, আজাদীতেই। দেহ আমেরিকায়, মন চট্টগ্রামে। এই যে বইটির দ্বিতীয় সংস্করণের প্রকাশনা উৎসব হচ্ছে, আমেরিকা গিয়েও তার অনেক ভালো লাগবে।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন— বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরু বাঙালি, ড. সংঘপ্রিয় মহাথেরো, গ্রন্থকার-অনুবাদক ফারজানা রহমান শিমু, কবি আবু মূসা চৌধুরী, আজাদীর বার্তা সম্পাদক দিবাকর ঘোষ, কবি দীপক বড়ুয়া প্রমুখ।

এসএ