
যেখানে একটি এমআরআই মেশিনের বাজার মূল্য দুই কোটি টাকা সেটি কেনা হয়েছে প্রায় ৬ কোটিতে। গরিবের হাসপাতালখ্যাত চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে শুধু এমআরআই মেশিন নয়, হাসপাতালের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি তিনগুণ বেশি দামে কেনা হয়েছে বলে জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একই কায়দায় প্রায় ১২ পদের ভারী যন্ত্রপাতি কেনায় ‘লুট’ হয়েছে প্রায় সোয়া ৯ কোটি টাকা। তবে দুদকের দায়ের করা মামলায় শেষ পর্যন্ত কারাগারেই যেতে হচ্ছে চট্টগ্রামের সাবেক সিভিল সার্জন ডা. সরফরাজ খান চৌধুরীকে।
রোববার (২৮ আগস্ট) মহানগর দায়রা জজ ও স্পেশাল জজ ডা. বেগম জেবুননেছার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করা হয়। পরে শুনানি শেষে সরফরাজ খানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
এরআগে ২০১৯ সালের ২৫ নভেম্বর দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. সিরাজুল হক বাদী হয়ে সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১ এ মামলাটি করেন। ৯ কোটি ১৫ লাখ ৩০ হাজার ৪২৫ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয় মামলায়।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট (মেডিসিন) ডা. মো. আব্দুর রব, জুনিয়র কনসালটেন্ট (অর্থোপেডিক সার্জারি) ডা. মো. মইন উদ্দিন মজুমদার, সিনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারি) ডা. বিজন কুমার নাথ, যন্ত্রপাতি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল সায়েন্টিফিক অ্যান্ড সার্জিক্যাল কোম্পানির স্বত্বাধিকারী মো. জাহের উদ্দিন সরকার, মেসার্স আহম্মদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মুন্সী ফারুক হোসেন এবং এএসএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও আফতাব আহমেদ।
দুদক সূত্র জানায়, চাকরিজীবনের বিভিন্ন সময়ে চট্টগ্রাম, বান্দরবান ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সিভিল সার্জনের দায়িত্ব পালন করেন সরফরাজ খান চৌধুরী। তার শেষ কর্মস্থল ছিল চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল। সেখান থেকে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে চাকরি থেকে অবসরে যান তিনি।
মহানগর পিপি মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী জানান, একটি এমআরআই মেশিনের বাজারমূল্য প্রায় দুই কোটি টাকা হলেও চট্টগ্রাম জেনালের হাসপাতাল সেটি কিনে ৬ কোটি ১৫ লাখ ৩০ হাজার ৪২৫ টাকায়। একইভাবে চারটি কালার ডপলার কেনা হয় ২ কোটি ৬০ লাখ টাকায়। যদিও এই মেশিনের দাম মাত্র ৯৮ লাখ টাকা। এভাবে বাজার মূল্যের চেয়ে দুই-তিনগুণ বেশি দাম দেখিয়ে মোট ৯ কোটি ১৫ লাখ ৩০ হাজার ৪২৫ টাকা সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৯ সালের ২৫ নভেম্বর সাতজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন দুদক সমন্বিত কার্যালয় চট্টগ্রাম ১-এর সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সিরাজুল হক।
এপি/এসএ