সোমবার ০২ অক্টোবর ২০২৩

| ১৬ আশ্বিন ১৪৩০

KSRM
মহানগর নিউজ :: Mohanagar News

প্রকাশের সময়:
০৬:৩৫, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২

মহানগর ডেস্ক

যেসব কারণে ক্যান্সার হয়, যে খাবারে প্রতিরোধ বাড়ে

প্রকাশের সময়: ০৬:৩৫, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২

মহানগর ডেস্ক

যেসব কারণে ক্যান্সার হয়, যে খাবারে প্রতিরোধ বাড়ে

প্রতীকী ছবি

মানব শরীরের জটিল রোগগুলোর মধ্যে ক্যান্সার অন্যতম। সঠিক সময়ে ক্যান্সার নির্ণয় করে চিকিৎসা না নিলে মৃত্যু ঘটতে পারে। ধূমপান, ডায়াবেটিস, ফাস্টফুড গ্রহণসহ নানা কারণে ক্যান্সার হতে পারে। এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানিয়েছেন কনসালট্যান্ট অধ্যাপক ডা. মোফাজ্জল হোসাইন।

ক্যান্সারের ক্ষেত্রে ৯০ শতাংশ ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশগত কারণে হয়ে থাকে। বাকি ১০ শতাংশ বংশানুক্রমে হয়। এক্ষেত্রে জিনের মাধ্যমে এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে ক্যান্সার হতে পারে। যেমন- নারীদের ক্ষেত্রে মা, খালা, নানী। কারো যদি ব্রেস্ট বা স্তন ক্যান্সার হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে বংশানুক্রমে বাচ্চার ক্ষেত্রে এ ধরনের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। আবার বাচ্চাদের চোখের পর্দা বা রেটিনায় এক ধরনের ক্যান্সার হয়ে থাকে। এটাও বংশগত কারণে হয়ে থাকে।

এছাড়া পরিবেশগত কারণে ক্যান্সার হয়। যেমন- রাসায়নিক পদার্থ তামাক বা টোবাকো। এক তামাকের মধ্যে চার হাজারের মতো কেমিক্যাল রয়েছে। তার মধ্যে ৪৫টি কেমিক্যাল সরাসরি ক্যান্সার সৃষ্টি করে। এটি নানারকম গবেষণায় প্রমাণিত। ধোয়াবিহীন তামাকও সমান ক্ষতিকর স্বাস্থ্যের জন্য।

এছাড়া আর্সেনিক অ্যালকোহল জাতীয় কেমিক্যালও ক্যান্সার সৃষ্টির জন্য দায়ী। কিছু ভৌত পদার্থ যেমন রেডিয়েশনের কারণেও ক্যান্সার সৃষ্টি হয়ে থাকে। এমনকি বিকিরণ যেমন সূর্যের আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি দীর্ঘদিন সরাসরি শরীরে পরলে চামড়ায় এক ধরনের ক্যান্সার সৃষ্টি হয়। এটা সাধারণত পশ্চিমা দেশগুলোতে বেশি দেখা দেয়।

যাদের ব্যায়াম, হাঁটাচলা কম করা হয়, মুটিয়ে যাবার ফলে তাদের ক্যান্সার হতে থাকে। নারীদের ক্ষেত্রে মুটিয়ে যাওয়ার ফলে স্তন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। নিয়মিত ব্যায়াম না করলে নারীদের মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর যদি তারা মুটিয়ে যায় এটাকে বলা হয় পোস্টমেনোপজাল ওবেসিটি। এর ফলে ব্রেস্ট ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যারা ফিজিক্যালি ইন-অ্যাকটিভ থাকেন, তাদের কনস্টিপেশন হয়। এর প্রভাবে খাদ্যনালীর ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

প্রায় ৪০ ভাগ ক্যান্সারের প্রধান কারণ ধুমপান। এর প্রভাবে ফুসফুস, মুখগহ্বর, খাদ্যনালী, প্যানক্রিয়াস, কিডনি, মূত্রথলির, পাকস্থলী, এমনকি ব্লাড ক্যান্সারও হয়ে থাকে। এছাড়া অ্যালকোহল মুখের ক্যান্সার, লিভারের ক্যান্সার, প্যানক্রিয়াসের ক্যান্সার এবং কিডনির ক্যান্সার ঘটাতে পারে।

ডায়াবেটিস রোগীদের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে প্যানক্রিয়াটিক ক্যানসার, হেপাটোবিলিয়ারি ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

কেউ কেউ মাংস জাতীয় খাবার বা চর্বিযুক্ত মাংস বেশি খেয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। এক্ষেত্রে রেকটাম এবং কোলন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

বাইরের খাবার বিশেষ করে ফাস্টফুড বেশি পরিমাণে খেলে ওবেসিটি বা মুটিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। ওবিসিটি অনেকগুলো ক্যান্সারের কারণ। কিছু কিছু খাবারে স্যাচুরেটেড ফ্যাট বেশি পরিমাণে থাকলে খাদ্যনালীর ক্যান্সার বা কলোরেক্টাল ক্যান্সার বেশি হয়। এছাড়া ব্রেস্ট ক্যান্সার, কিডনি ক্যান্সারও হতে পারে।

ক্যান্সার বিরদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে যেসব খাবার

মেয়েদের মধ্যে স্তন ক্যানসার এবং ছেলেদের মধ্যে ফুসফুসের ক্যান্সার প্রবণতা বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-এর বিশেষজ্ঞদের মতে, এই হারে ক্যান্সার ছড়াতে থাকলে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে প্রতি ঘরে এক জন করে ক্যানসার আক্রান্ত থাকবেন।

ক্যান্সার কোনও নির্দিষ্ট কারণে হয় না। বরং এটি ‘মাল্টি ফ্যাকেটেরিয়াল ডিজিজ’। সমীক্ষা বলছে, অতিরিক্ত বাইরের খাবার, তেল-মশলাদার খাবার, অতিরিক্ত চিনি ও ময়দা খেলেও ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। শরীরের যেকোনও কোষের অস্বাভাবিক ও অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধিই ক্যানসারের অন্যতম কারণ। শরীরের ওজন ঠিক রাখতে এবং ক্যান্সার ঝুঁকি কমাতে রোজের খাবারে রাখতে পারেন কয়েকটি খাবার।

গ্রিনটি

ইজিসিজি অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ গ্রিন টি শরীরে প্রদাহ রক্ষা দমন করতে সাহায্য করে। এ ছাড়াও কোষের সুরক্ষাও প্রদান করে গ্রিন টি।
মাশরুম
অনেক মেডিক্যাল পত্রিকাতে, মাশরুমকে ক্যান্সার প্রতিরোধের একটি অন্যতম খাদ্য হিসাবে ধরা হয়েছে। রোজ না হলেও সপ্তাহে দুই থেকে তিনদিন খেতে পারেন মাশরুম। শরীরে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের পরিমাণ বৃদ্ধি করতেও মাশরুম প্রভূত সাহায্য করে।

কোলিন সমৃদ্ধ শাকসবজি

ব্রকোলি, বাঁধাকপি, ফুলকপি, সর্ষে শাক, মুলো ইত্যাদি কোলিন ও অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ শাকসব্জি। এই সব্জিগুলিকে ক্যান্সার বিরোধী সব্জি হিসাবে গণ্য করা হয়।

এপিজেনিন সমৃদ্ধ খাবার

চেরি, আঙুর, ধনে পাতা, পার্সলে পাতা, আপেল, ভাল মানের রে়ড ওয়াইন ইত্যাদি এপিজেনিন যৌগ সমৃদ্ধ খাবার স্তন, প্রস্টেট ক্যানসার, ফুসফুস, ত্বক বা কোলন ক্যান্সার আশঙ্কা কমায়।

কিউয়ি

ভিটামিন সি সমৃদ্ধ কিউয়ি ডিএনএ মেরামত করতে বিশাল ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে কেমোথেরাপির পর কিউয়ি শরীরের জন্য বেশ অপরিহার্য।

কেডি