সোমবার ০২ অক্টোবর ২০২৩

| ১৬ আশ্বিন ১৪৩০

KSRM
মহানগর নিউজ :: Mohanagar News

প্রকাশের সময়:
১২:০১, ৯ জানুয়ারি ২০২২

কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজারে যুবলীগ নেতার মেয়েকে অপহরণ করলো বিএনপি নেতার ভাই

প্রকাশের সময়: ১২:০১, ৯ জানুয়ারি ২০২২

কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজারে যুবলীগ নেতার মেয়েকে অপহরণ করলো বিএনপি নেতার ভাই

অপহরণ মামলার প্রধান অভিযুক্ত মো. তুহিন

কক্সবাজার জেলা যুবলীগের এক প্রভাবশালী নেতার অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়েকে পৌর বিএনপি নেতা ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলামের ছোট ভাই মো. তুহিন অপহরণ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অপহরণের এক মাস পেরিয়ে গেলেও ওই ঘটনার সাথে জড়িত কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এমনকি অপহৃতকেও উদ্ধার করতে পারেনি।  

ভিকটিম বিমান বন্দর সড়কের একটি বেসরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। জন্ম সনদের অনলাইন সার্ভারের তথ্য অনুযায়ী সে ২০০৮ সালের ১৯ জানুয়ারী কক্সবাজার পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডে জন্মগ্রহণ করেছে। 

এ বিষয়ে ভিকটিমের মা শহরের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা বলেন, ‘২ ডিসেম্বর বেলা ১২ টার দিকে আমার মেয়ে প্রাইভেট পড়তে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর আর বাড়ি ফিরেনি। ওই ঘটনার কারণে ৩ ডিসেম্বর কক্সবাজার সদর থানায় মেয়ের বাবা একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন।’

এ বিষয়ে মেয়ের বাবা বলেন, ‘নিখোঁজ ডায়েরি করার এক ৪/৫ দিন পর আমরা জানতে পারি আমার মেয়েকে অপহরণ করেছে জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলামের ছোট ভাই মো. তুহিন। ওই ঘটনায় ১০ ডিসেম্বর সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আমি একটি মামলা করি। মামলার ১ মাস হলেও পুলিশ এখনও আমার মেয়েকে উদ্ধার করতে পারেনি। এমনকি কাউকে গ্রেফতারও করেনি।’

মামলার এজাহার সূত্র জানায়, জেলা যুবলীগ নেতার মেয়েকে বিয়ের প্রলোভনে ফুসলিয়ে অপহরণ ও সহায়তা করার অপরাধে ৬ জনের বিরুদ্ধে  মামলাটি লিপিবদ্ধ হয়েছে। অভিযুক্তরা হলেন, মো. তুহিন ও তার বাবা আবদুল কাদের আদু, তার মা মনিরা বেগম ও তুহিনের বড় ভাই মনিরুল ইসলাম ও ছোট ভাই রিদুয়ান। এছাড়া ওই মামলার অন্য আসামী হলেন, মৃত মফিজুর রহমানের ছেলে মো. হিমেল। 

এজাহারে দেয়া তথ্য মতে, বিগত এক বছর তুহিন ভিকটিমকে স্কুলে আসা যাওয়ার পথে বিরক্ত করতো, কুপ্রস্তাব দিতো। এনিয়ে বহুবার সামাজিক সালিশী বৈঠক হয়। ঘটনার মাস দুয়েক আগেও তুহিনকে ভিকটিমের পরিবারের পক্ষ থেকে সতর্ক করা হয়। এরপর তুহিন পিছু হটার ভান ধরে পরে ভিকটিমকে অপহরণ করে। 

এবিষয়ে ভিকটিমের বাবা আরও বলেন, ‌‘ঘটনার শুরু থেকেই পুলিশের আচরণ রহস্যজনক। তদন্ত কর্মকর্তার সাথে বহুবার যোগাযোগ করেছি। কিন্তু তিনি প্রতিবারই বলেন আপনারা সন্ধান দেন, পুলিশ উদ্ধার করে দেবে।’
 
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কক্সবাজার সদর থানার এস আই আবদুল হালিম বলেন, ‘ওই মামলার ৪ জন আসামি উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন। বাকি দুজনকে গ্রেফতার ও ভিকটিম উদ্ধারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে। ’

এবিষয়ে কক্সবাজার সদর থানার ওসি (তদন্ত) বিপুল চন্দ্র সেন বলেন, ‘তদন্ত কর্মকর্তার পাশাপাশি মামলাটি আমি নিজে তদারকি করছি। অভিযুক্তদের মুঠোফোন ট্র্যাকে দিয়েছি। তাদের সন্ধানে একাধিক ইউনিট কাজ করছে।’ 

এদিকে মামলায় অভিযুক্ত কক্সবাজার জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও পৌর বিএনপির সদস্য মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘এটি অপহরণের কোন ঘটনা নয়। আমার ছোট ভাইয়ের সাথে ভিকটিমের প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। তারা পালিয়ে বিয়ে করেছে।’

ভিকটিম প্রাপ্ত বয়স্ক কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘শুনেছি, মেয়ে প্রাপ্ত বয়স্ক।’ এছাড়া বিষয়টি সামাজিকভাবে নিস্পত্তি করতে কয়েকদফা বৈঠক হয়েছে বলেও তিনি জানান। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজার জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল হক সোহেল বলেন, ‘পুলিশের আচরণ রহস্যজনক। তারা এই মামলার ব্যাপারে ঢিল দিচ্ছে। তাদের আচরণে মনে হচ্ছে বিষয়টি আমাদেরকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে।’

এআই