মঙ্গলবার ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩

| ২০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩০

KSRM
মহানগর নিউজ :: Mohanagar News

প্রকাশের সময়:
১৩:০৭, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২২

রামগড় প্রতিনিধি

রামগড়ে পাহাড় কেটে মাটি পাচার, ভূমিধসের আশঙ্কা

প্রকাশের সময়: ১৩:০৭, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২২

রামগড় প্রতিনিধি

রামগড়ে পাহাড় কেটে মাটি পাচার, ভূমিধসের আশঙ্কা

পরিবেশ আইনে পাহাড় কাটা নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও পাহাড়খেকোরা খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলায় পাহাড় কাটছে। ফলে যেকোন সময় ভূমিধসের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। তাছাড়া টপসয়েল কেটে মাটি পাচার করায় আবাদী জমির উর্বরা শক্তি হৃাস পাচ্ছে চরমভাবে। 

জানা যায়, শ্মশান টিলা, খাগড়াবিল, নজিরটিলা, বল্টুরাম, তৈচালা, থলিবাড়ি, জালিয়াপাড়া, কালাডেবা, সোনাইআগা, বৈদ্যটিলা, ছেনচরি পাড়া এলাকায় ব্যাপকভাবে পাহাড় নিধন করা হয়েছে। সুযোগসন্ধানী দুর্বৃত্তদল পাহাড় কেটে ট্রাক ও ট্রাক্টর বোঝাই করে মাটি সরিয়ে নেয়। ইটখোলা, রাস্তা ও পুকুর ভরাটসহ নানা কাজে এসব মাটি ব্যবহার করা হয়।

রামগড় শ্মশান টিলার পাহাড়টি অপরিকল্পিতভাবে কাটায় এটি এখন অত্যন্ত বিপজ্জক অবস্থায় রয়েছে। এখানে বসবাসরত পরিবারগুলোর বসতভিটা, ফলদ ও বনজ গাছ হুমকীর মুখে পড়েছে। স্থানীয় অধিবাসীরা উদ্বেগ জানিয়ে বলেন, মাটি পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা না নিলে পাহাড়ের বাকি অংশটুকুও কেটে ফেলবে।

এ প্রসঙ্গে পরিবেশ সুরক্ষা আন্দোলন খাগড়াছড়ির সাধারণ সম্পাদক  আবু দাউদ বলেন, স্থানীয় কিছুসংখ্যক অসাধু ব্যক্তির ছত্রছায়াতেই এলাকায় নির্বিচারে পাহাড় কেটে বনভূমি ধ্বংস করার পাশাপাশি টপ সয়েল পাচার হচ্ছে। 

রামগড় উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) খোন্দকার ইখতিয়ার উদ্দিন আরাফাত বলেন, টিলা কাটার অপরাধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে জরিমানাসহ বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. ফারুকুর রহমান, মো. নজরুল, ইসমাইল মিয়া ও ইউনুছ অভিযোগ করে বলেন, আবুল কালাম ও হেলাল উদ্দিন গং পাতাছড়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় সংলগ্ন একটি টিলা কেটে সাবাড় করে ফেলেছে। পাহাড় কাটার ফলে নাকাপা এলাকায় বিদ্যুৎ বিভাগের সঞ্চালন লাইনের বৈদ্যুতিক খুঁটিসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ঘর-বাড়ি ধসে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। 

কালাডেবা গ্রামের জনৈক বাসিন্দা জানান, স্কুলটিলা ও সোনাইআগা এলাকার টিলা ও জমি থেকে  মাটি কেটে নিয়েছে একটি দুষ্ট চক্র। রামগড় পাহাড়াঞ্চল কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এস এম ফয়সাল জানান, টপসয়েল কেটে নেওয়ায় কৃষকদের অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে। এতে জমির স্বাভাবিক উৎপাদন মারাত্বকভাবে ব্যাহত হয়। 
 
রামগড় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বিশ্বপ্রদীপ কুমার কারবারি বলেন, প্রশাসনের অগোচরে অনেক সময় পাহাড় কেটে মাটি নিয়ে যায় কিছু অসাধু লোকজন। খবর পেলেই দোষীদের বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা নেয়, পাকরাও করে। তবে পাহাড় কাটা গুরুতর অপরাধ, এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। 

রামগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো.শাহ আলম মজুমদার বলেন, এই এলাকায় ভূমি ধসের আশঙ্কা রয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন কে জানিয়েও কাজ হয়না। সময়মতো অভিযান পরিচালনা না হওয়ায় অপরাধীরা পার পেয়ে যায়। মাটিখেকো চক্রগুলো প্রতিহত করতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে তৎপর হতে অনুরোধ জানান তিনি। 

এসএ