
খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করছেন কৃষক আবুল কাশেম
ঋতুবৈচিত্র্যের পালাক্রমে চলছে শীত। নানা রকম খাবার, ফুল-ফল, সবজি ও পিঠাপুলির আমেজ নিয়ে হাজির হয় শীতকাল। শীতকালীন খাদ্য তালিকায় প্রথমেই আসে অতিপ্রিয় খেজুরের রস। কিন্তু চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় গাছ ও গাছির অভাবে সেই মুখোরোচক খেজুর রস এখন বিলুপ্তর পথে। রস না পাওয়ার জন্য গাছির অভাব ও ইটভাটার আগ্রসনকে দায়ী করছেন এলাকাবাসী।
এদিকে শীতের শুরুতেই খেজুর গাছ কাটা শুরু করেন কৃষক আবুল কাশেম। গাছ থেকে রস নামাতেই বাজিমাত, নিয়ে যেতে হয় না বাড়িতে বা বাজারে। গাছের নিচে নামা মাত্রই ক্রেতা উপস্থিত, কিনে নেন হাঁড়িতে থাকা খেজুরের রস। এমনই চিত্র দেখা গেছে পদুয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায়।
কৃষক আবুল কাশেম বলেন, খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করতে হলে প্রথমে খেজুর গাছের মাথার অংশকে ভালো করে পরিষ্কার করতে হবে। এরপর পরিষ্কার সাদা অংশ কেটে বিশেষ কায়দায় ছোট-বড় কলসিতে (মাটির পাত্র) রস সংগ্রহ করা হয়। ঝুঁকি নিয়েই আমরা কোমরে রশি (দড়ি) বেঁধে গাছে ঝুলে রস সংগ্রহের কাজ করি। প্রতিদিন বিকালে ছোট-বড় কলসি (মাটির পাত্র) গাছে বাঁধি, সকালে রস সংগ্রহ করি। সেই রস নিয়ে নিকটতম বাজারে গেলে সবাই খেজুরের রস খাওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ে। আবার কেউ কেউ সকালেই এই রস জ্বালিয়ে গুড় তৈরি করেন। তবে, আমার রস বাজারে নিয়ে যেতে হয় না, গাছ থেকে নেমে বাজারে যাওয়ার পথেই বিক্রি হয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে যে হারে খেজুর গাছ হারিয়ে যেতে বসেছে তাতে এক সময় হয়তো আমাদের এলাকায় খেজুর গাছ থাকবে না। এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে চাইলে আমাদের সবার উচিত তালগাছের মতো বেশি বেশি খেজুর গাছ লাগানো এবং তা যত্ন সহকারে পরিচর্যা করা। আমি ৩ টা মতো খেজুর গাছ বর্গা নিয়েছি, সবকটির রস সংগ্রহ করে বিক্রি শেষে প্রতি ঋতুতে আমার ৫০ হাজার টাকার মতো লভ্যাংশ থাকে। তা দিয়ে কোনোভাবে সংসার চলে। তাছাড়া অন্য মৌসুমে মোটামুটি চাষবাস করেই আমার দিন পার হয়।
এদিকে তার প্রতি লিটার খেজুরের কাঁচা রস বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। প্রতিদিন প্রায় ১২ থেকে ১৫ লিটার রস বিক্রি করেন তিনি। প্রতিদিন রস বিক্রি করে ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকার মতো আয় করেন।
এআই