
শিমের রাজ্যখ্যাত চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বেশ কয়েকটি জাতের শিম চাষাবাদ করা হয়। এর মধ্যে লইট্টা, বাঁটা ও ছুরি জাতের শিম উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত এই অঞ্চল। তবে সম্প্রতি দেশ ও বিদেশে এই অঞ্চলে চাষাবাদ হওয়া নতুন জাতের একটি শিম বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
নতুন জাতের শিমটির নাম ‘রূপবান’। শিমটির রং বেগুনি। এটি শীত মৌসুম ছাড়াও অন্যান্য সময়ও অবাদ করা হয়। বিশেষ করে বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে এ শিম লাগানো হয়ে বলে একে গ্রীষ্মকালীন শিমও বলা হয়।
শীতের আগমণের পূর্বমুহূর্তে বর্ষা মৌসুমে খালে-বীলে, জমির আইলে, পাহাড়-নদীর ধারে রূপবান শিমের চাষাবাদ চলে। মাটির গুণগত কারণে সব মৌসুমে রূপবান শিমের চাষাবাদ হয়।
জানা যায়, মিরসরাই ও সীতাকুণ্ডের মাটি শিম চাষের উপযুক্ত হওয়ায় এই দুই অঞ্চলে বেশি ফলে এটি। তবে মাটির বিশেষ বৈশিষ্টতার কারণে উৎপাদনের দিক থেকে সীতাকুণ্ড অঞ্চলে বেশি উৎপাদিত হয়। স্বল্প খরচে মুনাফা বেশি আসায় রূপবান শিম চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকের।
শিম চাষী কামরুল ইসলাম বলেন, ‘পানি জমে না এমন জমিতে রূপবান শিম চাষ করা যায়। কম খরচে অধিক লাভ ঘরে ওঠায় এই জাতের শিম চাষে আগ্রহী আমরা। ইতোমধ্যে দেশ ও বিদেশে এটির বেশ চাহিদা তৈরি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এপ্রিল মাসে বীজ বপনের পর তিন মাসের মধ্যে ফলন শুরু হয়ে অক্টোবর-নভেম্বরে বাজারজাত করা যায়। চাহিদা থাকায় প্রতি কেজি শিমের মূল্য থাকে ৮০-১০০ টাকা। উর্বর ও উঁচু মাটিতে সারা বছর রূপবান শিমের চাষাবাদ ভাল হয় বলে জানান তিনি।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, শিম শীতকালীন সবজি। সীতাকুণ্ড লইট্টা, বাঁটা ও ছুরি জাতের শিম উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত। শীতে মাঠজুড়ে শিমের চাষ করা হয়। এমনকি জমির আলেও শিম চাষ হয়। কিন্তু রূপবান শিম লাগানো হয় বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে। শ্রাবণ মাস থেকে ফলন শুরু হয়। লাভ বেশি হওয়ায় রূপবান শিমের চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
কৃষক আজাদ হোসেন বলেন, সপ্তাহে দুই দিন শিম তুলে বাজারজাত করতে পারি। রূপবান শিম একবার লাগালে টানা এক বছর ধরে ফলন পাওয়া যায়। তবে শীতের সময় অন্যান্য শিম বাজারে এলে তখন রূপবানের দাম একেবারে কমে যায়। তখন আমরা শিম না তুলে বিচি সংগ্রহ করি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. হাবিব উল্লা বলেন, ‘লাভজনক হওয়ায় রূপবান শিম চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের। প্রায় ২৫ হেক্টর জমিতে রূপবান শিমের চাষাবাদ হয়। গত বছর ১৫০ মেট্রিক টন রূপবান শিমের চাষ হয়েছিল বলে জানান তিনি।
এআই