সোমবার ০২ অক্টোবর ২০২৩

| ১৬ আশ্বিন ১৪৩০

KSRM
মহানগর নিউজ :: Mohanagar News

প্রকাশের সময়:
১৪:০১, ২২ জুলাই ২০২২

ওবাইদুল আকবর রুবেল, ফটিকছড়ি

ফটিকছড়ির সড়ক-মহাসড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অবৈধ অটোরিকশা, বাড়ছে দুর্ঘটনা

প্রকাশের সময়: ১৪:০১, ২২ জুলাই ২০২২

ওবাইদুল আকবর রুবেল, ফটিকছড়ি

ফটিকছড়ির সড়ক-মহাসড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অবৈধ অটোরিকশা, বাড়ছে দুর্ঘটনা

নেই ড্রাইভিং লাইসেন্স, নেই ট্রেনিং। এর পরও চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির বিভিন্ন সড়ক থেকে মহাসড়কে দিব্যি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে তিন চাকার এ যানের সংখ্যা দিনদিন বৃদ্ধি হওয়ায় একদিকে যেমন বাড়ছে যানজট, তেমনি ঘটছে দুর্ঘটনাও।

যত্রতত্র দাঁড়িয়ে যাত্রী নামানো-ওঠানো হয়। এতে প্রায়ই যানজটের সৃষ্টি এবং দুর্ঘটনায় ঘটছে প্রাণহানি। অটোরিকশার কারণে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। এ যেন মহাসড়কের এক মহা যন্ত্রণা। প্রকাশ্যে হাইওয়ে পুলিশ এবং ট্রাফিক পুলিশের সামনে হরহামেশা এসব অবৈধ রিকশা-অটোরিকশা চলাচল করলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না বলে দাবি সচেতন মহলের।

জানা যায়, ফটিকছড়ি ও নাজিরহাট পৌরসভার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও গ্রামীণ সড়কগুলোতে দিব্যি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কয়েক শত ব্যাটারিচালিত অবৈধ অটোরিকশা। উচ্চ গতিসম্পন্ন এসব মোটরচালিত রিকশায় প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। তা ছাড়া এসব রিকশার ব্যাটারি অবৈধ পন্থায় চার্জ করা হয়। তাতে বিদ্যুতের অপচয় বাড়ছে। যে কারণে অফ-পিক আওয়ারেও লো-ভল্টেজ, লোডশেডিং তথা বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে ।

এসব ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইকের সংখ্যা দিনদিন বৃদ্ধি পাওয়ায় বিবিরহাট ১নং রোড, রাজঘাট, দরগাহ রোড, ঈদগাঁ রোড ও নাজিরহাট পৌরসভার ছকিনা কমিউনিটি সেন্টার সংলগ্ন, পেট্রোল পাম্প এলাকা, মেডিকেল রাস্তার মাথাসহ কয়েকটি এলাকায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বেশ কিছু গ্যারেজ গড়ে উঠেছে। অনেক অটোরিকশা মালিক মাসিক চুক্তিতে এসব গ্যারেজে রেখে চার্জ দেওয়া হয় বলে জানা গেছে।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তারা জানায়, একটি অটোরিকশা এবং ইজিবাইকের ব্যাটারিতে ৬ ঘণ্টা চার্জ দিতে হয়। ৬ ঘণ্টা চার্জ দিলে গতে তিন ইউনিট বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়। এলাকায় শত শত ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইক চলাচল করে। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, শত শত ব্যাটারিচালিত অবৈধ রিকশা-অটোরিকশা মহাসড়কে চলাচল করছে। সড়কে এসকল রিকশা অটোরিকশাগুলো জটলা করে মহাসড়ক দখলে সৃষ্টি হচ্ছে যানজটের। ট্রাফিকের দায়িত্বরতদের সামনেই এসব তিন চাকার যান চলাচল এবং দীর্ঘ সময় যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।

ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার চালক মো. আনাম জানান, দীর্ঘদিন বিদেশে ছিলেন। করোনা সময়ে দেশে ফিরে এসে একটি অটোরিকশা কিনেন। কেনার পর থেকে তিনি নিজেই চালান। আগে প্রতি মাসে বাড়িতে বিদ্যুৎ বিল আসতো ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকার মতো। কিন্তু এখন অটোরিকশা চার্জ দেওয়ায় প্রতি মাসে বিল আসে ১৬০০ থেকে ১৮০০ টাকা। 

আরেক অটোরিকশা চালক মো.শামসুদ্দীন বলেন, বাড়ির ব্যবহারিক বিদ্যুৎ থেকে রাতে ৫-৬ ঘন্টা চার্জ দিলে ১২-১৪ ঘণ্টা চালানো যায়।

গ্যারেজ মালিক মো. শহিদুল জানান, তার গ্যারেজে মাসিক চুক্তিতে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা, সিএসজি ও ভ্যান গাড়ি রাখা হয়। যাদের বাড়িতে জায়গা নেই বা নিরাপত্তার অভাব রয়েছে তারা সেখানে রাখেন। তার গ্যারেজেও অটোরিকশার ব্যাটারিতে চার্জে ব্যবস্থা রয়েছে। 

বাস ও ট্রাক চালকরা জানান, অটোরিকশা হঠাৎ করে রাস্তার মাঝখানে থেমে যাওয়া কিংবা হঠাৎ করে রাস্তার মাঝখানে চলে আসার কারণেই দুর্ঘটনাগুলো ঘটছে। ছোট গাড়ি হওয়ার পরও তারা বড় গাড়িকে ওভারটেক করতে গিয়ে বিপরীত দিয়ে আসা গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।

এ ব্যাপারে নজিরহাট হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিল মাহমুদ বলেন, আমি নতুন এসেছি। এসব অবৈধ তিন চাকার গাড়ির বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেব।’

এআই